April 19, 2024

চুমকি চৌধুরীকে মনে আছে? আশি নব্বুইয়ের দশকে বাংলা সিনেমায় চুটিয়ে কাজ করেছেন চুমকি। পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর মেয়ে চুকি বাবার পরিচালনাতেই প্রধাণত কাজ করেছেন।

অঞ্জন চৌধুরী মারা যাওয়ার পরে চুমকি অভিনয় থেকে সরে যান। প্রায় দু-দশক পর তিনি ফিরছেন বড়পর্দায়, ছবির নাম ‘কুলপি’, এই প্রথম নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। নিজের অভিনয় জীবন, বাবার সাথে সম্পর্ক আবার কাজে ফেরা নিয়ে ঘরোয়া আলাপচারিতায় মন খুললেন চুমকি।

বাবা চলে যাওয়ার পর একদমই সিনেমার জগত থেকে সরে যান। তাঁর পুরো পৃথিবীটাই ছিল বাবা। বাবার হাত ধরেই ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয় করা। তাই বাবার চলে যাওয়ার পরে আর কাজ করেননি। অঞ্জন চৌধুরী মারা যাওয়ার সময় এরাও শত্রু ছবির কাজ চলছিল। অঞ্জন চৌধুরীর ছেলে কাজ শেষ করেন। তখন চুমকি সেটে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদতেন। তারপর দীর্ঘ বিরতি নিয়েছিলেন চুমকি। ২০০৭ সালে বাবা চলে যাওয়ার পর ২০১৮ অবধি কাজই করেননি। এরপর ধারাবাহিক করেন, তারপর এই ছবি।

আসলে বাবা ছাড়া অন্য কোন পরিচালকের সাথে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন না চুমকি। বাবা অঞ্জন চৌধুরীই তাঁর কেরিয়ারের সব সিদ্ধান্ত নিতেন। এমনকি তরুণ মজুমদারের ভালোবাসা ভালোবাসা ছবির অফার পেয়েও ছেড়ে দিয়েছিলেন। সুখেন দাসের একটি ছবিও ছেড়ে দেন। আসলে বাবা চাননি মেয়ে অন্য ইউনিটে কাজ করুক। বাবার ছবি থেকে এত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন যে, আর কোনও ছবি করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেননি চুমকি।

প্রায় এক দশক পরে ছবিতে ফিরছেন। তার কারণ ছবির গল্পটা বেশ আলাদা। প্রথমে রাজি হননি কারণ এটা নেগেটিভ চরিত্র। আগে কখনও করেননি দর্শক কীভাবে নেবেন তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। পরিচালক বর্ষালি জোর করেই রাজি করিয়েছেন তাঁকে। নেগেটিভ চরিত্র করাটা চুমকির কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কেননা তিনি নিজে একজন ধীরস্থির শান্ত মানুষ। তবে পরিচালক চুমকির কাজে সন্তুষ্ট। এখন দর্শক কীভাবে গ্রহণ করবে সেটা নিয়ে চিন্তিত তিনি।

এতবছর পর ফিরে চুমকি মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রি অনেকটাই বদলে গেছে। কাজের ধারা থেকে শুরু করে ছবির প্রোডাকশন, মেকিং বদলেছে। আগের মত পরিবারকেন্দ্রিক ছবি আর হয়না। তাঁর মতে কনটেন্টের এই বদলটা না হলে ভালো হত। আগের মত সিনেমা আর বেশিদিন চলেনা। সিনেমাহল অনেক কমে গেছে। টিভি, মোবাইলে বিনোদন পেতে যাওয়ায় হলে গিয়ে ছবি দেখছেন না মানুষ। পারিবারিক কনটেন্টের অভাব এর কারণ বলে মনে করছেন চুমকি। নিজেদের সময়ে স্বজনপোষণ নিয়ে মুখ খুলেছেন চুমকি। তাঁর মতে স্বজনপোষণ সম্ভব নয়। প্রসেনজিৎ -ঋতুপর্ণার মত জুটি একেরপর এক হিট ছবি দিয়েছে তাই প্রযোজক পরিচালকরা এই জুটিকে ছবিতে নিয়েছেন। সফল বলেই তাঁদের জুটি কাজ পেয়েছে। এই ব্যাপারে স্বজনপোষণের রাজনীতি দেখতে চুমকি নারাজ।