March 24, 2024

সম্প্রতি নিজের আসন্ন ছবি কাছের মানুষ’ (Kacher Manush) উপলক্ষ্যে অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ের (Debashree Roy) সাথে নিজের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি (Prosenjit Chatterjee)। এই দুই অভিনেতার ব্যাক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে এমনিতেই সিনেমাপ্রেমী মানুষদের কৌতূহলের শেষ নেই। এইবারে বুম্বাদার মুখে আসল ঘটনা শুনে অনেকেই বেশ অবাক হয়েছেন।

পরিচালক হৃষিকেশ মুখার্জির (Hrishikesh Mukherjee) ‘ছোট্ট জিজ্ঞাসা’ (Chotto Jigyasa) সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম হাতেখড়ি হয়েছিল প্রসেনজিতের। এর পরে বিমল রায়ের (Bimal Roy) ‘দুই পাতা’ (Duti Pata) সিনেমায় প্রথমবার প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ১৯৮৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অমর সঙ্গী’ ( Amar Sangi) সিনেমার মধ্যেই দিয়ে তাঁর পরিচিতি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিভিন্ন নায়িকার বিপরীতে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের। তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘চোখের বালি’ (Chokher Bali ), ‘দোসর’ (Dosar), ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ (Shob Charitro Kalponik), ‘অটোগ্রাফ’ (Autograph) ‘ক্ষত’ (Khawto), প্রাক্তন (Praktan) , ‘জাতিস্মর’ (Jaatishwar) প্রভৃতি। ২০১২ সালে বাঙালি পরিচালক দিবাকর ব্যানার্জী (Dibakar Banerjee) পরিচালিত ‘সাংহাই’ (Shanghai) নামে হিন্দি সিনেমায় ইমরান হাসমি (Emraan Hashmi) , অভয় দেওল (Abhay Deol) -এর মত হিন্দি সিনেমার খ্যাতনামা নায়কদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অসাধারণ চরিত্রে অভিনয় করে জিতে নিয়েছিলেন সেরা পার্শ্ব অভিনেতার (Best Supporting Actor) পুরস্কার। এছাড়া ‘দোসর’ (Dosar) , ‘মনের মানুষ’ (Moner Manush) , ‘শঙ্খচিল’ (Shankhachil) প্রভৃতি সিনেমার জন্য সেরা নায়কের পুরস্কার জিতেছিলেন। ২০১৩ সালে তাঁকে সরকারের পক্ষ থেকে মহানায়ক সম্মানে (Mohanayak Samman) ভূষিত করা হয়েছিল। অন্যদিকে বাংলা সিনেমা জগতে দেবশ্রী রায়ও এক উল্লেখযোগ্য নাম। বাংলা সিনেমার সঙ্গে নিজের দীর্ঘ সফল অভিনয় জীবনে অনেক হিন্দি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। ১৯৬৬ সালে হিরণ্ময় সেন (Hiranmoy Sen) পরিচালিত ‘পাগলা ঠাকুর’ (Pagal Thakur) সিনেমায় রামকৃষ্ণদেবের ছোটবেলার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮১ সালে অপর্ণা সেন ( Aparna Sen) পরিচালিত ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’ (36 Chowringhee Lane) সিনেমার জন্য ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন খ্যাতনামা এই অভিনেত্রী। তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘কুহেলি’ (Kuheli ) , ‘বালিকা বধূ’ (Balika Vadhu ) ,’অন্তরে বাহিরে’ (Antare Bahire ) প্রভৃতি। সিনেমা জগৎ থেকে কিছু বছরের বিরতি নেওয়ার পরে জি বাংলায় ‘সর্বজয়া’ (Sarbajaya) নামে ধারাবাহিকে একেবারে অন্য ভূমিকায় ধরা দিয়েছিলেন তিনি। অভিনেত্রী ছাড়াও দেবশ্রী একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী। ‘নটরাজ ড্যান্স ট্রুপ’ (Natraj dance troupe) বলে তাঁর নাচের নিজস্ব দল রয়েছে। এছাড়া সারমেয় প্রেমী হিসেবেও তাঁর যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে।

নিজেদের দীর্ঘ অভিনয় জীবনে এই দুই অভিনেতা অনেকের বিপরীতে অভিনয় করলেও বাংলা সিনেমায় প্রসেনজিৎ -দেবশ্রী জুটি একসময় বেশ হিট ছিল সবার কাছে। পেশাদার জীবনে একসাথে অভিনয় করতে গিয়ে একসময় ব্যক্তিগতভাবেও একে ওপরের বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন এই দুই শিল্পী। ১৯৯৪ সালে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও পরের বছরই তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। প্রসেনজিৎ এর পরেও দু’বার বিবাহসূত্রে বাঁধা পড়লেও দেবশ্রী রায় এখনও অবিবাহিত রয়ে গিয়েছেন। কিছুদিন আগে কাছের মানুষ অভিজিৎ গুহ (Abhijit Guha)-এর সাথে শেয়ার করলেন দেবশ্রী রায়ের সাথে বিচ্ছেদের পরে তাঁর মনের অবস্থা। এই ঘটনার পরে দেড় বছর নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন অভিনেতা। এর পরে আবার নতুন করে শুরু করেছিলেন নিজের জীবন। তবে বরাবরই নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তেমনভাবে আলোচনা করেননি বুম্বাদা। কিন্তু কাছের মানুষ সিনেমার প্রচারে সহ অভিনেতা দেব (Dev) তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মজা করলেও প্রসেনজিতের কাছ থেকে তেমন কোন নেতিবাচক প্রতিক্রয়া দেখতে পাওয়া যায়নি। ছবির প্রচারের জন্য দেব যে স্ট্যান্ড আপ কমেডির আয়োজন করেছিলেন তাতে বেশ স্বতঃফূর্তভাবেই অংশ নিয়েছিলেন। এমনকি দেব তাঁর বিয়ের সংখ্যা চারটে বললে সেটাকে তিনটে বলে শুধরেও দিয়েছেন বুম্বাদা।

সিনেমার বাইরেও পছন্দের অভিনেতাদের ব্যাক্তিগত কাহিনী নিয়ে সবারই বেশ কৌতূহল থাকে। কিন্তু প্রায় সব অভিনেতাই পেশাগত  গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত টানাপোড়েনের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে চান না। এতে গসিপ আরও বৃদ্ধি পায়। তবে এখন এইসব গোপন কথাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসাটা ছবির প্রচারের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই কারণে অনেক অভিনেতার জীবনের না জানা তথ্য আকস্মিকভাবেই সামনে চলে আসে যা ছবির সাফল্যের উপরে পরবর্তীকালে অনেকটাই প্রভাব ফেলে।